
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্ত হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত একমাত্র সরকারের ওপর নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাহিনীটির মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান। তিনি জানান, র্যাব বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ দমনে নিয়োজিত রয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কাওরান বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিন বন্ধে পরিচালিত জনসচেতনতামূলক অভিযানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ডিজি শহিদুর রহমান বলেন, ‘র্যাব বিলুপ্ত হবে কিনা এ নিয়ে আমরা কোনও ভাবনা-চিন্তা করছি না। এটি সম্পূর্ণভাবে সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। আমরা এখন ব্যস্ত আছি কীভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা যায়, অপরাধ দমন করা যায় এবং সাধারণ মানুষকে চাঁদাবাজি, দস্যুতা ও অপহরণের মতো অপরাধ থেকে সুরক্ষা দেওয়া যায়।’
নির্বাচন সামনে রেখে বাহিনীর প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে র্যাব প্রধান জানান, ‘সরকার যে দায়িত্ব দেবে, র্যাব তা পালনে প্রস্তুত রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি দিন দিন পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দরকার, তা আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবো।’
গণঅভ্যুত্থানের পর সহিংসতা চলাকালে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে র্যাবের তৎপরতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে এবং আমরা এটিকে আরও জোরদার করবো। নির্বাচনের আগে যতটুকু অস্ত্র অবশিষ্ট আছে, তা উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে।’
৫ আগস্টের পর র্যাব কীভাবে অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে, সে প্রসঙ্গেও কথা বলেন এ কে এম শহিদুর রহমান। তিনি জানান, ‘৫ আগস্টের পর সংস্থাটি বিভিন্ন বড় অপরাধ দমনে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড, গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যা এবং টঙ্গীতে আট টুকরা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় র্যাব একাধিক আসামিকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া কক্সবাজারে মাদকবিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও মাদকসহ বহু কারবারিকে আটক করা হয়েছে। দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখতে এবং অপরাধ দমনে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’
এর আগে পরিবেশ রক্ষায় পলিথিনবিরোধী অভিযান সম্পর্কে কথা বলেন র্যাব ডিজি। তিনি জানান, ‘নিষিদ্ধ পলিথিন আমাদের পরিবেশের জন্য খুব ক্ষতিকর। আমাদের দেশের ট্রেডিশনাল ক্রাইম হয়তো কোনও ব্যক্তি বা কোনও গোষ্ঠীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিন্তু পরিবেশ যদি আমরা নষ্ট করি, পরিবেশের ওপর যে আক্রমণ, সেটি কিন্তু আমাদের মানবজাতি বা প্রাণীজগতকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সুতরাং, আমরা যাতে পরিবেশ নষ্ট না করি, আমাদের পরিবেশ যাতে ঠিক থাকে, সেজন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পলিথিনবিরোধী অভিযানে আমরাও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছি এবং এই নিষিদ্ধ পলিথিন যাতে ব্যবহার না হয়, এটা যাতে বন্ধ করা যায়, সে জন্য একযোগে কাজ করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘পলিথিন যেখানে তৈরি হয় সেই ফ্যাক্টরিগুলো আমরা খুঁজে বের করে সেগুলোকে বন্ধ করবো। এটার পরিবহনে আমরা বাধা দেবো এবং এখানে (কাওরান বাজার) আসছি মূলত খুচরা লেভেলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতন করতে। আমরা যদি মানুষকে সচেতন করতে পারি, তারা যদি নিজেরাই পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করেন, তাহলে এটা একটা পজিটিভ কাজ হবে।’