
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইটের ব্যবস্থা খুব শিগগিরই শুরু হতে পারে। বাংলাদেশের হাইকমিশনার ইকবাল হুসাইন খান জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে পাকিস্তানের মাহান এয়ার সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট করাচি–ঢাকা রুটে চালু করতে পারে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, এটি দুই দেশের বাণিজ্য ও যোগাযোগকে নতুন মাত্রা দেবে। খবর প্রকাশ করেছে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
লাহোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এলসিসিআই) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার বলেন, ভিসা প্রক্রিয়া এখন অনেক সহজ হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, “এলসিসিআই ও লাহোরে বাংলাদেশের সম্মানিত কনস্যুলেটের যৌথ সুপারিশে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে সদস্যদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে।” এই পরিবর্তন দুই দেশের ব্যবসায়ীদের যাতায়াতকে আরও সহজ করবে।
ব্যবসায়িক সম্ভাবনার দিকেও হাইকমিশনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান বাংলাদেশে চাল রপ্তানি করতে পারবে, আর বাংলাদেশ পাকিস্তানে তাজা আনারস সরবরাহ করতে পারবে। এছাড়াও টেক্সটাইল ও রেডিমেড গার্মেন্টস খাতেও দুই দেশের মধ্যে বড় বাণিজ্য সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, শিগগিরই সরাসরি কার্গো শিপিং সার্ভিস চালু করা হবে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বিদ্যমান কার্গো সার্ভিসের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে আলাদা সরাসরি রুটের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
শিক্ষা খাতেও দুই দেশের সহযোগিতার সম্ভাবনা রয়েছে। হাইকমিশনার বলেন, পাকিস্তানের হায়ার এডুকেশন কমিশন শিগগিরই ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি দল বাংলাদেশে পাঠাবে, যাতে আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পাকিস্তানে পড়াশোনায় আগ্রহী হয়। তিনি পাকিস্তানের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা এবং দুই দেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও মূল্যবোধের মিল তুলে ধরেন, এবং বলেন, “বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত একটি সম্প্রদায় হিসেবে পরিচিত।”
সভায় এলসিসিআই সভাপতি ফাহিমুর রহমান সাইগল বলেন, “পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে।” তিনি জানান, পাকিস্তান বাংলাদেশে চাল রপ্তানি আরও বাড়াতে পারে এবং পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে শেখার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তি, অটোমোবাইলসহ বিভিন্ন খাতে যৌথভাবে কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্তমানে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার। বক্তাদের মতে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে তা ৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়া সম্ভব। সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। হাইকমিশনারের আমন্ত্রণে এলসিসিআই সভাপতি জানিয়েছেন, তিনি শিগগিরই একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে ঢাকা সফর করবেন।