
রাতের নিরবতা ভেঙে আবারও কেঁপে উঠল দক্ষিণ এশিয়া। সোমবার রাতে ৪.৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্প বাংলাদেশসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি দেশে অনুভূত হয়, যার কেন্দ্র ছিল মিয়ানমার বলে জানিয়েছে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলো।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ধারাবাহিকভাবে বেশ কিছু ভূমিকম্প হওয়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। নরসিংদীর মাধবদী, বাইপাইল, বাড্ডা এবং নরসিংদীর অন্যান্য অঞ্চলে উৎপত্তি হওয়া কম্পনগুলো বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। যদিও সর্বশেষ কম্পনের উৎস ছিল মিয়ানমার, এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণ এশিয়ার বিস্তৃত এলাকাজুড়ে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, শুধু প্রতিবেশী দেশে নয়, বাংলাদেশেও এখন ভূমিকম্প তৈরি হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ও এর আশপাশে মোট ৭৬টি ভূমিকম্প নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২১ নভেম্বর নরসিংদীতে হওয়া ভূমিকম্পকে তারা “ইন্ট্রাপ্লেট ইভেন্ট” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের সাবেক পরিচালক এ কে এম শাকিল নেওয়াজ পরিস্থিতির গুরুতরতা তুলে ধরে বলেছেন, “মূল ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭.৮ কিংবা তারও বেশি হতে পারে, এ অবস্থায় আফটারশকও থাকবে এবং পরিস্থিতি হবে চরম চ্যালেঞ্জপূর্ণ।”
জিপিএস ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন ফল্ট লাইন প্রতি বছর কয়েক মিলিমিটার করে সরছে, যা সম্ভাব্য বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষ করে সিলেট, সুনামগঞ্জের দৌকি ফল্ট, ময়মনসিংহ, ঢাকার মধুপুর ফল্ট এলাকা, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম এবং উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর ঝুঁকি বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত নজরদারি এবং জনসচেতনতা না বাড়লে বড় ধরনের ভূমিকম্প ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তাদের আশঙ্কা, বড় কম্পন হলে পরিবহন, পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বিদ্যুৎ খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।