
পাবনার ঈশ্বরদীতে পুকুরে ফেলে আটটি কুকুর ছানাকে হত্যার অভিযোগে সরকারি বাসভবন ছেড়েছেন উপজেলা ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন। সোমবার (১ ডিসেম্বর) উপজেলা প্রশাসন থেকে তাকে বাসভবন ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে নোটিশ জারি করা হয়। পরে মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) তিনি পরিবার নিয়ে সরকারি বাসভবন ছেড়ে ভাড়া বাসায় উঠেছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার তাকে বাসা ছেড়ে দিতে নোটিশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার তিনি বাসা খুঁজে নিয়ে সরকারি বাসভবন ছেড়ে তার মালামাল নিয়ে চলে গেছেন।
এদিকে কুকুর ছানা হত্যা করায় মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে ঈশ্বরদী থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ.স.ম আব্দুন নুর বলেন, মামলার এজাহার লেখার কাজ চলছে। এজাহার পেলেই মামলা রুজু হবে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের এক কোনায় থাকে একটি কুকুর। কুকুরটি বিশ্বস্ত হওয়ায় মানুষজন তাকে খুব ভালোবাসে। নাম রাখা হয় টম। এক সপ্তাহ আগে টম আটটি বাচ্চা প্রসব করে। সোমবার সকাল থেকে তার ছানাগুলো না পেয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা যায় মা কুকুর টমকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈশ্বরদী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন ও তার স্ত্রী জীবন্ত আটটি কুকুর ছানাকে বস্তার মধ্যে বেঁধে হত্যার উদ্দেশ্যে রোববার রাতের কোনো এক সময় ফেলে দেন উপজেলা পরিষদের পুকুরে। একদিন পর সোমবার সকালে পাওয়া যায় কুকুর ছানাগুলোর মরদেহ। দুপুরের পর মৃত কুকুর ছানাগুলোকে ইউএনওর বাসভবনের পাশে মাটি চাপা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হাসানুর রহমান নয়ন বলেন, দরজার সামনে ডাকাডাকি করায় তার স্ত্রী বিরক্ত হয়ে বাসার কাজের মহিলাকে দিয়ে কুকুর ছানাগুলো বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দিয়েছিল।
গত রোববার (৩০ নভেম্বর) রাতে কোনো এক সময় কুকুরছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। পরদিন সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলার সামনে মা কুকুরটিকে ঘুরতে দেখা যায়। বারবার সরানোর চেষ্টা করলেও সরানো যায়নি। পরে সরানো গেলেও সারাদিন তাকে উপজেলা চত্বরে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।