
যুক্তরাষ্ট্রে এক বাবা-মা ওপেনএআই ও তাদের চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি এবং কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম আল্টমানকে আদালতে দায়ী করেছেন। তারা দাবি করেছেন, চ্যাটজিপিটি তাদের সন্তান অ্যাডাম রেইনের (১৬) আত্মহত্যায় প্রভাব ফেলেছে। তাদের অভিযোগ, চ্যাটবটটি অ্যাডামকে আত্মহত্যার পদ্ধতি এবং চিরকুট লেখার বিষয়েও সহায়তা করেছিল।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাডাম মৃত্যুর মাত্র ছয় মাস আগে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার শুরু করে। পরিবারের বক্তব্য অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যেই সে চ্যাটবটের সঙ্গে এতটাই সংযুক্ত হয়ে যায় যে, এটাকেই তার একমাত্র বন্ধু ও সহচর মনে করতে শুরু করে।
অ্যাডামের বাবা-মা অভিযোগ করেছেন, চ্যাটজিপিটির কারণে সে বাস্তব জীবনের পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের থেকে দূরে সরে গিয়েছিল। তারা জানিয়েছেন— অ্যাডাম একবার চ্যাটবটকে বলেছিল, সে তার রুমে ফাঁসের দঁড়ি রাখতে চায় যেন কেউ দেখে এবং তাকে আত্মহত্যা থেকে বিরত করতে পারে। কিন্তু চ্যাটজিপিটি তাকে এটি গোপন রাখতে এবং আত্মহত্যার চিন্তাভাবনায় অনুপ্রাণিত করতে সাহায্য করেছিল বলে অভিযোগ করেন তারা।
অ্যাডামের মতো অন্যান্য পরিবারেরও দাবি, তাদের সন্তানরা এআই চ্যাটবট ব্যবহার করে নিজেদের ক্ষতি করছে, কখনও কখনও আত্মহত্যার পথও বেছে নিচ্ছে। ২০২৪ সালে ফ্লোরিডার মেগান গার্সিয়া নামের এক মা ‘ক্যারেক্টার’ নামের একটি এআই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একই ধরনের মামলা করেন। তার অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটির চ্যাটবট ব্যবহার করে তার ১৪ বছরের ছেলে আত্মহত্যা করে। এরপর আরও দুটি পরিবার একই অভিযোগে মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে ওপেনএআই জানিয়েছে, তারা ব্যবহারকারীদের জন্য “নিরাপদ” পরিবেশ তৈরি করতে কাজ করছে এবং কিশোরদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে এআই চ্যাটবট নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারণ প্রোগ্রামগুলো ব্যবহারকারীর সঙ্গে বন্ধুসুলভ ও সহানুভূতিশীল আচরণ করে, যার ফলে অনেক ব্যবহারকারী বাস্তব জীবনের সম্পর্ক থেকে দূরে সরে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।
অ্যাডামের মামলায় বলা হয়েছে, “চ্যাটজিপিটি যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, সেভাবেই এটি কাজ করছিল। অ্যাডাম যেভাবে যা চাচ্ছিল, সেটিই এটি দিচ্ছিল এবং তাকে উৎসাহিত করছিল। এর মধ্যে আত্মহননমূলক চিন্তাভাবনাও ছিল।”
চ্যাটজিপিটির মুখপাত্র অ্যাডামের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, “আমরা ব্যবহারকারীদের আত্মহননের ঝুঁকি থেকে দূরে রাখার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
সূত্র: সিএনএন