
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেছেন, ফারাক্কা ব্যারেজের কারণে অন্তত ২০টি নদী সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, যৌথ নদী কমিশনে চিঠি দিয়েও ভারত থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায় না।
শনিবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সমাজ চিন্তা ফোরামের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় দৈনিক আমাদের সময়ের সম্পাদক আবু সাইদ খান, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
মেজর হাফিজ আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আইন দুর্বল হওয়ায় ছোট দেশগুলো তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি জানান, ভারতের বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের নদীসমূহে তীব্র স্রোত সৃষ্টি হচ্ছে, যার ফলে বাঁধগুলো ভেঙে যাচ্ছে, এবং নতুন বাঁধ নির্মাণে বিএসএফ বাধা প্রদান করছে।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ মন্তব্য করেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনায় নদীগুলোর প্রতি অবহেলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের বাঁধ, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে পানিসংকট বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নদী রক্ষার জন্য উন্নয়ন দর্শন পরিবর্তন করা, ক্ষতিকর প্রকল্প বাতিল করা এবং ঋণদাতাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হলেও বর্তমানে নদীগুলি সবচেয়ে অবহেলিত। অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা না পাওয়া এবং অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশ বর্তমানে ভয়াবহ পানি সংকটে পড়েছে। ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার, ফারাক্কা ও গজলডোবা ব্যারেজের কারণে শুষ্ক মৌসুমে ভাটির দিকে পানি প্রবাহ কমে যাচ্ছে। এর ফলে কৃষি, নাব্যতা, জীববৈচিত্র্য ও মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। দেশে প্রায় ১,৪১৫টি নদী থাকলেও বর্তমানে কতগুলো নদী জীবিত রয়েছে তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। নদী দূষণ, দখল, খাল ভরাট ও অব্যবস্থাপনার কারণে অনেক নদী খালে পরিণত হয়েছে।
অন্যদিকে, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিবছর গড়ে তিন মিটার নিচে নামছে, কিছু অঞ্চলে তা ৪০ মিটার পর্যন্ত নেমে গেছে।