
“আমি যে কথাগুলো বলেছিলাম, যদি কেউ মিথ্যা প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে আমি শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে দেব।” — সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এমন মন্তব্য করেছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক মো. রাসেল, যিনি সম্প্রতি আলোচনায় আসেন তার ভাইরাল ভিডিওকে ঘিরে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা ওই ভিডিওতে রাসেল মাস্টার বলেন, “এই যে আজ আমি আমার বন্ধুর বাসায় বেড়াতে এসে ভিডিও করছি, তাহলে কি এই বাসাটা আমার হয়ে গেল?”
এর আগে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনের সময় তার একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে রাসেল বলেছিলেন, ছেলেকে তিনি ইলিশের কথা বলে পাঙ্গাশ মাছ খাওয়ান এবং আর্থিক সংকটের কারণে স্ত্রীর আবদারে ঘুরতে যেতে পারেন না। সেই ভিডিওতে তিনি শিক্ষকদের সীমিত আয়, আর্থিক চাপ ও সামাজিক অবহেলার কথা তুলে ধরেন।
কিন্তু ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তার পুরোনো কিছু ছবি ও ভিডিও—যেখানে তাকে ঘুরতে যাওয়া, দামি খাবার খাওয়া ও আরামদায়ক জীবনযাপন করতে দেখা যায়। এসব দৃশ্য শেয়ার করে অনেক নেটিজেন তার বিরুদ্ধে ‘মায়াকান্না’ ও ভণ্ডামির অভিযোগ তোলেন।
এই সমালোচনার জবাবে আরেক ভিডিও বার্তায় রাসেল মাস্টার বলেন, “মানুষের জীবনে বর্ণাঢ্যতা থাকতে পারে, বিচিত্রতা থাকতে পারে। সে কাজের প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে যেতে পারে। তার মানে এই নয় যে, ওই বাড়িটা তার বা গাড়িটা তার। শিক্ষা সফরে যেতেই পারে। ভালো কাপড় পরে থাকলেই যে সে অভাব-অনটনের শিকার নয়, তা নয়।”
নিজের বাস্তব অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “আমি একজন শিক্ষকের সন্তান। বাবার ইচ্ছাতেই শিক্ষকতা পেশায় এসেছি। শৈশব থেকেই অভাব-অনটনের মধ্যে বড় হয়েছি, এখনো সেই অবস্থার মধ্য দিয়েই চলছি। আমি খুবই ঋণগ্রস্ত একজন মানুষ—যা প্রকাশ করার মতো নয়। প্রমাণসহ একদিন আপনাদের সামনে হাজির হবো। আমরা এমন অবস্থায় আছি, যা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আমরা ধার করেই চলি, এ কথাগুলো চরম সত্য।”