
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলে অংশগ্রহণকারী তিনজন প্রার্থীর পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক ড. তারেক বিন আতিক। তারা হলেন প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী একে এম রাকিব, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মো. আনন বিন রহমান এবং কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ।
গত রোববার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভূমিকম্পজনিত ছুটির কারণে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে বিভাগীয় শহরগুলোতে বাস সার্ভিস দেওয়ার কথা বললে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তাদের ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন।
তিনি পোস্টে উল্লেখ করেন, "এই মহৎ প্রচেষ্টার জন্য একে এম রাকিব ও মো. আরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আননকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সর্বপ্রথম তোমরাই পরিবহন প্রশাসকের অফিসে এসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে বিভাগীয় শহরগুলোতে গাড়ি দেয়ার অনুরোধ করেছিলে।" যা জকসু নির্বাচন আচরণ বিধির ৬ (ঙ) এর স্পষ্ট লঙ্ঘন। জকসু নির্বাচন আচরণ বিধির ৬ (ঙ) এ স্পষ্টত উল্লেখ আছে, "বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো রকম অংশগ্রহণ বা প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না।"
যদিও অন্যান্য প্যানেল; বিশেষ করে শিবির সমর্থিত “অদম্য জবিয়ান ঐক্য” প্যানেলও একই দাবি তুলেছিল, কিন্তু পরিবহন পরিচালক তাদের নাম উল্লেখ করেননি।
এ বিষয়ে পরিবহন প্রশাসক ড. তারেক বিন আতিক বলেন, "আমার শিক্ষার্থী হিসেবে আমি ওদেরকে জাস্ট আপ্রিসিয়েট করছি। এটা কোনো বিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে না। আমি এখানে জাস্ট কমেন্ট করেছিলাম, আমি কোনো ফেসবুক পোস্ট করিনি। আর এটা নিয়ম লঙ্ঘনের কোনো বিষয় নয়। আমি অন্যান্য শিক্ষার্থীদেরও এরকমটা করে থাকি।"
এর আগে তিনি এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, "জকসু নির্বাচন নিয়ে লিখব না ভেবেছিলাম! কিন্তু কিছু প্রেক্ষাপট আমার মনে দাগ কাটায় এড়িয়ে যেতে পারিনি!" ওই পোস্টে তিনি লেখেন, "৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতির ঐক্যমত গঠনের মাধ্যমে মানবিক বাংলাদেশ গঠনের সমূহ সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু কিছু দলের অপরিপক্ক আচরণের কারণে ঐক্যমত আর গড়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। যারা অতি ডানপন্থী ইসলামিক দলের ভাবধারার অনুসারী হিসেবে পরিচিত, তারা মনে করেন বিএনপি হলো আওয়ামী লীগের মতোই! তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। অধিকন্তু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বিকল্প বিএনপি! আপনাকে উপলব্ধি করতে হবে: বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও স্বাভাবিক উন্নয়নের জন্য বিএনপির প্রয়োজন রয়েছে। বিগত ১৬/১৭ বছর একই বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে রাজনৈতিক অধিকার ও স্থিতিশীলতার জন্য আন্দোলন করেছে বিএনপি-জামায়াত! এখন কথায় কথায় বিএনপিকে দোষী সাব্যস্ত করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে; এটা আদৌতে বিএনপিকে কোনঠাসা করে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের নামান্তর! একই ভুল জামায়াত ইসলাম করেছিল ১৯৯৬... এই অপরাধমূলক ভুলের কারণে তাদেরকে অনেক মাশুল দিতে হয়েছিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হলো বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতির একটি সম্প্রীতির মডেল, যার অধিকাংশ ক্রেডিট বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল - Bangladesh Jatiyotabadi Chatrodol জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের!"
"কারণ এই ইউনিটের সকলে মানবিক বাংলাদেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ এবং স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার রাজনীতিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। জকসু নির্বাচন ২০২৫ উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আমেজ বিরাজ করছে এবং সকল পক্ষই জয়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে কিছু পেইজ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে সুকৌশলে কাজ করে যাচ্ছে, যেমন: জবিয়ানস ভয়েস! ভালো প্রোপাগান্ডা চালানো দোষের কিছুই না! কিন্তু জকসুর পূর্বেই কোনো সুনির্দিষ্ট ছাত্রসংগঠন তথা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা চালানো উচিত নয়। সকল ছাত্র সংগঠন ভালো কাজের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উৎসবমুখর জকসু উপহার দিক, যাতে করে জকসুর মাধ্যমে বাংলাদেশে জাতীয় নেতৃত্ব তৈরি হয়।"
এছাড়াও বিভিন্ন সময় তিনি নিয়মিত বিএনপির পক্ষে ও ছাত্রদলের বিভিন্ন প্রচার–প্রচারণা করে থাকেন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে।