
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিবির-সমর্থিত প্যানেল ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ কমিশনের ওপর পক্ষপাত, আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং ভোট পিছিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলটি জানায়, তফসিল ঘোষণা হওয়ার আগে থেকেই নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ শুরু করে। ২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বেশিরভাগ সংগঠন ২৭ নভেম্বর ভোটের পক্ষে মত দিয়েছিল, তবে ছাত্রদলের আপত্তির পর কমিশন ভোটের তারিখ পরিবর্তন করে ২২ ডিসেম্বর নির্ধারণ করে। তারা দুটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বলেন, ভোট পেছানোর বিষয়ে ছাত্রদলের চাপের অভিযোগ আগেই উঠেছিল।
প্যানেলের অভিযোগ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান নিজের বিভাগের এক প্রার্থীকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।
এছাড়া পরিবহন প্রশাসক তারেক বিন আতিকের দুই ভিন্ন বক্তব্যের বিষয়টিও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি প্যানেলের। প্রথমে তিনি ছাত্রদল-সমর্থিত দুই প্রার্থীর অনুরোধে পরিবহন সুবিধা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন, পরে বললেন উপাচার্যের নির্দেশে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্যানেল আরও অভিযোগ করে, ২৩ নভেম্বরের কনসার্টে প্রার্থীদের স্টেজে ওঠার নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থীসহ কয়েকজন স্টেজে উঠে বক্তব্য দেন এবং অনুদানের ঘোষণা করেন। তাদের মতে এটি কমিশনের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
প্যানেলের নেতারা বলেন, এত বড় লঙ্ঘনের পরও কমিশন কেবল দুইজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে এবং জবাব দেওয়ার জন্য ১৫ দিন সময় রেখেছে, যা তাদের মতে ‘উদ্দেশ্যমূলক শিথিলতা’।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আচরণবিধি অনুযায়ী ১২ নভেম্বরের পর কল্যাণমূলক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ছাত্রদল ১৬ নভেম্বর প্লেট-গ্লাস বিতরণ করে। একই রাতে জিএস প্রার্থী ও সহযোগীরা রাত ১২টার পর কুইজ আয়োজন ও উচ্চ শব্দে গান বাজান, যা বিধিবহির্ভূত।
প্যানেল দাবি করে, ২৪ নভেম্বর কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে অধিকাংশ প্যানেল ভোট ২২ ডিসেম্বর আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছিল, তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিবির ছাড়া সবাই ভোট পেছানোর পক্ষে।’ তাদের অভিযোগ, এই বক্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাত বন্ধ, আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রয়োগ এবং নির্ধারিত তারিখে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার দাবি জানায়।