
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে আদালত অবমাননার অভিযোগে তলব করেছে। আদালত আগামী ৮ ডিসেম্বর তাকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করা হয়। ২৬ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই অভিযোগ করেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হোসেন তামীম।
অভিযোগে প্রসিকিউটর বলেন, একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে ফজলুর রহমান বলেছেন, তিনি এই ট্রাইব্যুনাল মানেন না। তিনি যুক্তি দেখান যে, ট্রাইব্যুনালটি মূলত ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার করার জন্য গঠিত হয়েছে এবং এখানে অন্য ধরনের বিচার সম্ভব নয়।
প্রসিকিউটর আরও বলেন, "এই ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, ক্রাইম অ্যাগেইনস্ট পিসের বিচার করতে পারেন। এখন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে। ফজলুর রহমানের মাথায় শুধু যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি আছে।"
টকশোর আরেকটি অংশ উদ্ধৃত করে প্রসিকিউটর বলেন, ফজলুর রহমান বলেন, "এই কোর্টের গঠনপ্রক্রিয়া বলে; এই কোর্টে বিচার হতে পারে না। এই কোর্টে যারা বিচার করছেন, আমার ধারণা তাদের মধ্যে ভেতরে একটা কথা আছে।"
প্রসিকিউটর মোনাওয়ার হোসেন বলেন, "ফজলুর রহমান সুপ্রিম কোর্টের একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে এ ধরনের মন্তব্য করার পরিণতি জানেন। তারপরও তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ট্রাইব্যুনালের গঠনপ্রক্রিয়া, বিচার নিয়ে প্রতিনিয়ত বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। ট্রাইব্যুনালকে অবমূল্যায়ন করে বক্তব্য দিয়েছেন। এতে প্রতীয়মান হয়, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে আদালত অবমাননা করছেন।"
অভিযোগ উপস্থাপনের সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর সদস্য-২ বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। তবে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার ও সদস্য-১ বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন না।
প্রসিকিউশন শুনার পর বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী বলেন, এটি খুবই গুরুতর অভিযোগ।
ফজলুর রহমান আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৪ আসন (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন।