
রাজধানীর রামপুরায় জুলাই-আগস্টের সহিংসতায় ২৮ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত দুই সেনা কর্মকর্তাকে কঠোর নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। আলোচিত এ মামলার শুনানি ঘিরে সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল এলাকায় ছিল কড়া নজরদারি।
বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর সকাল সোয়া ১০টার পর সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে আনা হয় বিজিবি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম এবং বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলমকে। চারজনের বিরুদ্ধে আনুষঙ্গিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আজ শুনানি নেওয়ার কথা রয়েছে। এ শুনানি হবে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে।
ট্রাইব্যুনালের চারপাশ ঘিরে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সাধারণ পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন রয়েছে র্যাব, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা।
মামলায় আরও দুইজন এখনো পলাতক। তারা হলেন ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রাশেদুল ইসলাম এবং রামপুরা থানার সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান। পলাতকদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেয় ট্রাইব্যুনাল-১ এর সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের প্যানেল। সেই একই দিনে অভিযুক্ত দুই সেনা কর্মকর্তার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাসুদ সালাহউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার ক্লায়েন্টদের সশরীরে উপস্থিত না রেখে ভার্চুয়ালি শুনানিতে অংশ নেওয়ার আবেদন করেছিলেন। এ বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা।
এর আগে, ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা রেদোয়ানুল এবং রাফাতকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। পাশাপাশি পলাতকদের হাজিরা নিশ্চিত করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পটভূমিতে জানা যায়, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে সহিংসতায় বহু মানুষ নিহত হন। শুধু রামপুরাতেই প্রাণ হারান ২৮ জন এবং আহত হন আরও অনেকে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রামপুরায় বিজিবি কর্মকর্তা রেদোয়ানুল ইসলামকে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি চালাতে দেখা গেছে। অভিযোগে আরও উল্লেখ আছে, অন্য অভিযুক্তরাও ওই হত্যাযজ্ঞে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এ সব তথ্যের ভিত্তিতেই প্রসিকিউশন চারজনের বিরুদ্ধে আলাদা ফরমাল চার্জ দাখিল করে ট্রাইব্যুনালে।