
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্যের জন্য দেশজুড়ে প্রার্থনার ঢল নেমেছে। সেই আবহেই মাদরাসার শিশুদের দোয়া আল্লাহ নিশ্চয়ই গ্রহণ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর আদাবরের জামিয়া আরাবিয়া আহসানুল উলুম মাদরাসা ও এতিমখানায় বিএনপির রিকশা, ভ্যান ও অটোচালক দলের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আয়োজিত কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে সাদকায়ে জারিয়া হিসেবে দুটি খাসি গরিব ও অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়।
রিজভী শিশুদের উদ্দেশে বলেন, ‘এই মাদরাসার মাসুম বাচ্চাদের সামনে আর কী-ই বা বক্তব্য রাখবো? আজ তারা দুহাত তুলে আল্লাহর কাছে দোয়া চাইবে এমন একজন মানুষের জন্য, যিনি রাজনীতিতে আসার দিন থেকেই দেশের মানুষের কল্যাণ, তাদের সুখ-দুঃখের সাথেই নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। তাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বড় ধরনের প্রলোভন দেখানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে দেশের স্বাধীনতা ও মানুষের অধিকার রক্ষার পথেই থেকেছেন।’
তিনি অভিযোগ করেন যে খালেদা জিয়াকে দীর্ঘদিন একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার রক্ষার লড়াইয়ের শাস্তি হিসেবে। রিজভীর ভাষ্য, তার চিকিৎসা ছিল অপ্রতুল এবং খাবারে বিষপ্রয়োগ নিয়েও মানুষের মনে সন্দেহ রয়েছে। একটি সুস্থ মানুষ যিনি হেঁটে কারাগারে প্রবেশ করেছিলেন, আড়াই বছর পর তাকে হুইলচেয়ারে বের হতে হয়েছে, যা দেশবাসী এখনও ভুলতে পারেনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তার চোখের অপারেশনসহ নানা শারীরিক জটিলতায়ও তাকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। তবুও তাকে মাটি ও মানুষের সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়নি। আজ সারাদেশ কাঁদছে, মাদরাসার এতিম শিশুরাও তার জন্য দোয়া করছে। তিনি শুধু একটি দলের নন; আজ নানা রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সমাজ, আলেম-ওলামা এবং বিদেশি রাষ্ট্রনায়করাও তার সুস্থতা কামনা করছেন।’
রিজভী আরও বলেন, ‘আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি; তিনি যেন আমাদের এই প্রিয় নেত্রীকে দ্রুত সুস্থ করে তোলেন এবং দীর্ঘ হায়াত দান করেন। তিনি প্রায় ১৫-১৬ বছর ধরে নির্যাতন সহ্য করেছেন, কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুল ইসলাম স্বপন, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল, সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. জাহাঙ্গীর কবির, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুর রহমান জাহিদ, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওসার এবং ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আওয়াল উপস্থিত ছিলেন।