
অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের দুইটি লকার থেকে মোট ৮৩২.৫ ভরি বা ৯ কেজি ৭১৬ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে লকার খোলার সময় উপস্থিত ছিলেন একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ন শাখার স্বর্ণ বিশেষজ্ঞ, এনবিআরের কর গোয়েন্দা ও সিআইসির দুই কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা।
২০০৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে শেখ হাসিনা পূবালী ব্যাংকের একটি এবং অগ্রণী ব্যাংকের দুটি লকারের উল্লেখ করেছিলেন। পুনঃযাচাইয়ের অংশ হিসেবে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. মাসুদুর রহমান আদালতে লকার খোলার আবেদন করেন। এর ভিত্তিতে লকার খোলা হয়।
মঙ্গলবার পূবালী ব্যাংক মতিঝিল কর্পোরেট শাখা এবং অগ্রণী ব্যাংক প্রিন্সিপাল শাখায় তিনটি লকার খোলা হয়। দুদকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
লকারগুলোর অবস্থার বিবরণ- পূবালী ব্যাংক লকার নং-১২৮: গ্রাহক শেখ হাসিনা; একটি খালি ছোট পাটের ব্যাগ পাওয়া গেছে।
অগ্রণী ব্যাংক লকার নং ৭৫১/বড়/১৯৬: গ্রাহক শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল; পাওয়া গেছে ৪,৯২৩.৬০ গ্রাম স্বর্ণালংকার।
অগ্রণী ব্যাংক লকার নং ৭৫৩/বড়/২০০: গ্রাহক শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সিদ্দিক; পাওয়া গেছে ৪,৭৮৩.৫৬ গ্রাম স্বর্ণালংকার।
সব লকারের মালামাল ইনভেন্টরি তৈরি করে শাখার ব্যবস্থাপকের জিম্মায় রাখা হয়েছে। দুদক ধারণা করছে, লকারে উপস্থিত স্বর্ণালংকার শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা সিদ্দিক, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সজীব ওয়াজেদ জয় ও ববি ওয়াজেদের হতে পারে।
উল্লেখ্য, ১০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মতিঝিলের পূবালী ব্যাংক সেনা কল্যাণ ভবন শাখায় শেখ হাসিনার লকার নং ১২৮ জব্দ করে সিআইসি।
গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। একই সঙ্গে তাদের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরই অংশ হিসেবে পলাতক দুই আসামির সম্পত্তি ক্রোক ও বাজেয়াপ্ত করার জন্য লকার খোলা হয়েছে বলে এনবিআর জানিয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের কর ফাঁকি ও দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশ দেয়। এই অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে শেখ হাসিনার নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের লকার জব্দ করা হয়েছিল।