বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলা, পুলিশসহ আহত ৫, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী


Jan 2025/Feb 2025/jypurhat-thana-1742316186.jpg

জয়পুরহাটে ক্ষেতলালে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যসহ ৫ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে ক্ষেতলাল থানায় এ ঘটনা ঘটে।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা তিনজনকে ছিনিয়ে নেয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থের নেতৃত্বে থানায় হামালা চালানো হয়। এ সময় দায়িত্বরত দুই পুলিশ সদস্য বাঁধা দিলে তাদের মেরে আহত করে ও থানা অবরুদ্ধ করে। পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে সেনাবাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করা হয়।

আহতরা হলেন- পৌর এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন (৩৫), একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম (২৭), বগুড়ার শাহজাহানপুরের রফিক (৩৭) ও আব্দুল মমিন (৩৮)। আহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন- কাজী জাফর ও সুমন। এছাড়া সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জে আহত হোন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক।

ভুক্তভোগী আহত রফিক জানান, ক্ষেতলাল পৌর এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন জমি রেজিস্ট্রির জন্য ক্ষেতলাল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আসেন। এ সময় স্থানীয় পৌর বিএনপির ৯নং ওয়ার্ডের সভাপতি কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপি কর্মী মাসুদ চৌধুরী, গোলাম মওলা ও জুয়েল সেখানে উপস্থিত হয়ে তার নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অপারগতা জানালে তারা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থকে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ সেখানে উপস্থিত হয়ে চাঁদা না দিলে দলিল রেজিস্ট্রি করতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দেয়। তাকে বাধা দিতে গেলে তোফাজ্জলসহ তার চার আত্মীয়কে মারধর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় পুলিশ তোফাজ্জলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান।

থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা বাকি তিনজনকে ছিনিয়ে নেয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন থানায় আক্রমণ করে দায়িত্বরত দুই পুলিশ সদস্যকে আহত করে থানা অবরুদ্ধ করে। পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে সেনাবাহিনীর ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকসহ তিনজনকে আটক করা হয়।

খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স, জেলা গোয়েন্দা শাখা ও কালাই থানা পুলিশের শতাধিক সদস্য থানায় অবস্থান নেন।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান জানান, দলের যে কেউ হোক যে অপরাধ করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযান অব্যাহত আছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×