
জালিয়াতি, সোর্স ট্যাক্স অনিয়ম, ব্যাংক হিসাব ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি এবং প্রায় ৩৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরমান আর চৌধুরী ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাদিমসহ চারজনের বিরুদ্ধে চারটি পৃথক মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (৩০ নভেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক আজিজুল হক বাদী হয়ে এই মামলাগুলো দায়ের করেন। দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রথম মামলা:
প্রথম মামলায় সাবেক এমডি ফরমান আর চৌধুরী এবং সাবেক ডিএমডি ও সিএফও মোহাম্মদ নাদিমের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এজাহার অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তারা নিয়োগপত্রের শর্ত লঙ্ঘন করে মূল বেতনের অতিরিক্ত সাত ধাপে এ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
দ্বিতীয় মামলা:
দ্বিতীয় মামলায় ব্যাংকের জেনারেল লেজার (জিএল) হিসাব থেকে ৮৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একই দুই কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, তারা যোগসাজশে বিভিন্ন ভাউচারের মাধ্যমে জিএল হিসাব থেকে এ অর্থ তুলে আত্মসাৎ করেন।
তৃতীয় মামলা:
তৃতীয় মামলায় এজেন্ট ব্যাংকিং কমিশন থেকে আদায়কৃত সোর্স ট্যাক্স সরকারি কোষাগারে জমা না রেখে ৩৬ কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক এমডি ফরমান আর চৌধুরী, সাবেক ডিএমডি মোহাম্মদ নাদিম, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফজলুর রহমান চৌধুরী এবং সাবেক ডিএমডি আবেদ আহাম্মদ খানকে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৩৬১ কোটি ১০ লাখ ৬২ হাজার ৩৩২ টাকার কমিশনের ওপর ১০ শতাংশ হারে ৩৬ কোটি ১১ লাখ ৬ হাজার ২৩৩ টাকা সোর্স ট্যাক্স কর্তন করা হলেও তা কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি।
চতুর্থ মামলা:
চতুর্থ মামলায় বোনাস বাবদ নিজের প্রাপ্যতার অতিরিক্ত ৫৩ লাখ ৮০ হাজার ৪০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আবারও ফরমান আর চৌধুরী ও মোহাম্মদ নাদিমকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত বোনাস গ্রহণ করেন।
সব মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।