৮ দাবি না মানলে নার্সদের রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি

নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ন্যাব) দেশের নার্সদের অধিকার সুরক্ষার জন্য শনিবার (২৯ নভেম্বর) হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যে আট দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে সারা দেশে কঠোর আন্দোলনে নামবে তারা। এই দাবিগুলো মধ্যে রয়েছে ১০ম গ্রেড থেকে নার্সিং সুপারভাইজার ও নার্সিং ইন্সট্রাক্টর পদকে নবম গ্রেডে উন্নীত করা এবং স্বতন্ত্র নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের অন্য কোনো অধিদপ্তরের সঙ্গে একীভূতের চেষ্টা বন্ধ করা।

এই হুঁশিয়ারি ন্যাবের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিলকিছ জাহান চৌধুরী রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দেন। তিনি লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে আট দফা দাবি বিস্তারিত তুলে ধরেন।

আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:

১. স্বতন্ত্র নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরকে অন্য অধিদপ্তরের সঙ্গে একীভূতকরণের চেষ্টা বন্ধ করা এবং জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠন।

২. প্রস্তাবিত নিয়োগবিধি, অর্গানোগ্রাম, স্ট্যান্ডার্ড সেটআপ ও ক্যারিয়ার পাথ দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়ন।

৩. নার্সদের পরবর্তী উচ্চতর পদে নবম থেকে চতুর্থ গ্রেডে পদোন্নতি।

৪. নার্সিং সুপারভাইজার ও নার্সিং ইন্সট্রাক্টর পদকে ১০ম থেকে নবম গ্রেডে উন্নীত করা।

৫. ডিপ্লোমা নার্স-মিডওয়াইফদের সনদকে স্নাতক (পাস) সমমান ঘোষণা এবং সব গ্র্যাজুয়েটের জন্য প্রফেশনাল বিসিএস চালু করা।

৬. বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগবিধি ও বেতন কাঠামো প্রণয়ন এবং অপ্রশিক্ষিত ও নিবন্ধনবিহীন নার্স-মিডওয়াইফদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।

৭. বর্তমান সরকারের চাপানো নার্সিং ইউনিফর্ম পরিবর্তন ও ঝুঁকিভাতা প্রণয়ন।

৮. শয্যা–রোগী–চিকিৎসক অনুপাতে নার্স-মিডওয়াইফদের পদ তৈরি ও নিয়োগ।

বিলকিছ জাহান বলেন, “ন্যায্য দাবি আদায়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে আমাদের দাবি উঠেছে, কিন্তু এখনও কোনো সমাধান হয়নি। তাই আমরা আজকের সংবাদ সম্মেলন করছি। যদি দাবি না মানা হয়, আমরা সারা দেশে রাজপথে নার্সদের নিয়ে আন্দোলন চালাব।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “১৯৭৭ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে স্বতন্ত্র নার্সিং প্রশাসন সেবা পরিদপ্তর প্রতিষ্ঠা হয়, যা বর্তমানে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর হিসেবে রয়েছে। কিন্তু তা বিলুপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। এটি জনগণবিরোধী ও জনস্বাস্থ্যবিরোধী, তাই বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠন করা অপরিহার্য। আমাদের দাবিগুলো ব্যক্তিগত নয়, দেশের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কারের দাবি।”

সংবাদ সম্মেলনে ন্যাবের সহসভাপতি ফিরোজা খাতুন, সহসভাপতি জেসমিন আক্তার, মহাসচিব আকরাম আলী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মেরিনা খাতুন, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিশর হোসেন, প্রচার সম্পাদক সালাহউদ্দিন ও আলম হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।