
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনও আগের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বৃহস্পতিবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে, “অসংখ্য নির্যাতনের মধ্যেও যার অটল মনোভাবকে দমানো যায়নি, তার নাম খালেদা জিয়া। তাকে নির্যাতন করে অসুস্থ করা হয়েছে। দেশে আজ সবাই দোয়া করছেন, তিনি যাতে সুস্থ হয়ে আবার দেশের মানুষের কাছে ফিরে আসতে পারেন।”
রিজভী আরও জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আগামীকাল শুক্রবার প্রতিটি মসজিদ, মন্দির ও উপাসনালয়ে দোয়া এবং মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বিএনপির “দেশ গড়ার পরিকল্পনা” কর্মসূচি ৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন। এই কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্য ও চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলও অংশ নিচ্ছেন। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে তারা এভারকেয়ার হাসপাতালে এসে দীর্ঘ সময় ধরে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা পর্যবেক্ষণ করেছেন।
গত কয়েক বছরে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় খালেদা জিয়াকে দুটি মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তিনি দুই বছরেরও বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন। এরপর করোনাকালে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে আবেদন করা হলে সরকারের পক্ষ থেকে তার সাজা স্থগিত ও মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়, যদিও চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস এবং চোখের বিভিন্ন সমস্যা সহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর তিনি মুক্তি পান। এরপর চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থানের পর গত ৬ মে দেশে ফিরেন।
বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসন নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে আছেন। গত ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে দলের শীর্ষ নেতারা, বিশেষ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ হোসেন, তার স্বাস্থ্য সংকটাপন্ন অবস্থার বিষয়টি উদ্বেগের সঙ্গে তুলে ধরছেন।