
কক্সবাজার সৈকতে দাঁড়িয়ে আছে বিশালদেহী দৈত্য সাদৃশ্য দানব। যাকে ঘিরে আছে উৎসুক জনতা, তবে এটা আসল নয়। মানুষের ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক দিয়ে একদল স্বেচ্ছাসেবী এই দানব তৈরি করেছে। প্লাস্টিকের কারণে দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে এটি তৈরি করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সৈকতের সীগাল পয়েন্টে নির্মাণ করা হয়েছে সাগরের প্লাস্টিক বর্জ্যে তৈরি এই দানব ভাস্কর্য, যা প্রদর্শন করা হবে তিন মাস।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় 'প্লাস্টিক দানব' প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান।
তিনি বলেন, দূষণের হাত থেকে সমুদ্রকে বাঁচাতে এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। সৈকতে আসা লাখো পযটকের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে এটি রাখবে ভূমিকা।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বডির সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, সরকারের পলিসির সাথে সমন্বয় করে আমরা সারাদেশ থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে ৫০০ মেট্রিক টন পরিত্যক্ত প্লাস্টিক রিসাইকেল করেছি। এতে করে প্লাস্টিক বর্জ্য ম্যানেজমেন্টে সরকারি খরচ যেমন কমবে তেমনি মানুষও জানতে পারবে কীভাবে রিসাইকেলের মাধ্যমে বর্জ্য কে সম্পদে রুপান্তর করা যায়।
দেশব্যাপী এমন উদ্যোগের অংশ হিসেবে কক্সবাজারে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ৬ মাসব্যাপী প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন কাজ করবে বলে জানান তিনি।
ভাস্কর্য নির্মাণে জড়িতদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্লাস্টিক ভাস্কর্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ভাস্কর ও শিল্পী আবীর কর্মকার জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের একদল শিল্পী মিলে ৬ মেট্রিক টন ওসান প্লাস্টিক ব্যবহার করে বিশ্বের বৃহত্তর এই প্লাস্টিক ভাস্কর্যটি তৈরি করেছেন। প্লাস্টিক বর্জ্যের পাশাপাশি এটিতে ব্যবহার করা হয়েছে কাঠ, পেরেক ও আঠাসহ (গাম) আরও কয়েকটি উপকরণ।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের দায়িত্বরত স্বেচ্ছাসেবক মুহাম্মদ মুবারক জানান, গত প্রায় ৪ মাস ধরে কক্সবাজার, ইনানী ও টেকনাফের সমুদ্র সৈকত থেকে সংগৃহীত সামুদ্রিক প্লাস্টিক বর্জ্য ভাস্কর্যে ব্যবহৃত হয়েছে।
বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটক ও স্থানীয়দের মাঝে প্লাস্টিক বর্জ্যের দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে ভিন্নধর্মী এই উদ্যোগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুরো পর্যটন মৌসুম সর্বসাধারণের জন্য এই প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে যাকে কেন্দ্র করে এখানে প্লাস্টিক দূষণবিরোধী সচেতনতামূলক পথ নাটক ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।