.png)
দিনাজপুরের বিরামপুর রেলস্টেশনে জন্মের পর মায়ের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়া সেই নবজাতক কন্যা অবশেষে একটি নতুন অভিভাবক পরিবার পেয়েছে। জন্মের মাত্র ১৮ দিন পর সমাজসেবা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শিশুটিকে দায়িত্ব গ্রহণকারী দম্পতির কাছে হস্তান্তর করা হয়। শিশুর নামে ১০ লাখ টাকা মূল্যের ২২ শতক জমি রেজিস্ট্রি এবং অর্থ জমা রাখার প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে এই হস্তান্তর সম্পন্ন হয়েছে বলে সমাজসেবা বিভাগ জানিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০ নভেম্বর গভীর রাতে বিরামপুর রেলস্টেশনে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী ফুটফুটে একটি কন্যাশিশুর জন্ম দেন। খবর পেয়ে স্থানীয় নারীরা নবজাতকের যত্ন নেন এবং প্রসূতি মাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তবে পরদিনই ওই নারী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। পরে স্টেশনের আমেনা বেগম শিশুটিকে সাময়িকভাবে নিজের হেফাজতে নেন, কিন্তু স্থায়ী প্রতিপালন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সমাজসেবার মাধ্যমে সমাধান খোঁজা হয়।
বিরামপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব আব্দুল আউয়াল জানান, অভিভাবকহীন শিশুটিকে গ্রহণের জন্য পাঁচটি পরিবার আবেদন করেছিল। আবেদনের পর তাদের আর্থিক স্থিতি ও সামাজিক যোগ্যতা যাচাই করে একটি পরিবারকে বাছাই করা হয়। কলেজপাড়া হোসেনপুর মহল্লার ইকবাল হোসেন ও তার স্ত্রী ছাবিনা আকতার লীজা নবজাতকের নামে জমি রেজিস্ট্রি ও অর্থ ডিপোজিটের অঙ্গীকার পূরণ করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত তাসনীম আওন ও সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল নবজাতককে ওই দম্পতির হাতে তুলে দেন। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘদিনের ইচ্ছা পূরণ হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ইকবাল হোসেন ও ছাবিনা আকতার লীজা বলেন, “আমাদের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। আমাদের একটি কন্যা সন্তানের প্রত্যাশা ছিল। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সেই আশা পূরণ করে দিয়েছেন। আমরা তাকে বুকে আগলে নিয়ে আমাদের চারতলায় তুলেছি।” তারা জানান, শিশুটির নাম রাখা হয়েছে- ফাতেমা জান্নাত তুবা, এবং তার প্রতিপালনে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।