
ইসরায়েল এক জিম্মির মরদেহের বিনিময়ে ১৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফিরিয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে বুধবার এই মরদেহ হস্তান্তর সম্পন্ন হয়। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে গাজায় জিম্মি করে আনা ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত দুই জনের মরদেহ এখনও ফেরত দেওয়া হয়নি। ওই দুই জিম্মির একজন ইসরায়েলি ও অপরজন থাই নাগরিক। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের চুক্তি অনুযায়ী মরদেহ বিনিময় প্রক্রিয়া শেষের পথে রয়েছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম জানিয়েছেন, তাদের দুই জিম্মির মরদেহ হস্তান্তরের ব্যাপারে হামাস অঙ্গীকারবদ্ধ। ইসরায়েল অভিযোগ করে, ১৩ অক্টোবর শেষ জীবিত জিম্মি মুক্তি পাওয়ার পর থেকে হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে হস্তান্তর দেরি করছে। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে মরদেহ উদ্ধারে সময় লাগছে।
তুরস্ক, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা মঙ্গলবার কায়রোতে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা করেছেন। গত ১০ অক্টোবর স্বাক্ষরিত চুক্তির ধারাবাহিকতায় এই আলোচনা শুরু হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে পরিকল্পনা করা হচ্ছে গাজায় আন্তর্জাতিক সশস্ত্র বাহিনী (আইএসএফ) মোতায়েন এবং পুনর্গঠন ও প্রশাসনিক তদারকির জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠন। আইএসএফ-এর দায়িত্ব হবে গাজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং হামাসকে নিরস্ত্র করা; যা ইসরায়েলের মূল দাবি। ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা এই বাহিনীতে ২০ হাজার শান্তিরক্ষী পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন।
তবে পরিকল্পনার বিস্তারিত বাস্তবায়ন ও সময়সীমা নিয়ে বড় প্রশ্ন বিদ্যমান। দুই পক্ষেরই চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকলেও নাজুক এই যুদ্ধবিরতি এখনও টিকে আছে।
এদিকে, পশ্চিম তীরের এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বুধবার অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বৃহৎ সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, এটি সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান। তবে এই অভিযান সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য তারা প্রকাশ করেনি।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রত্যেক জিম্মির মরদেহের বিপরীতে ইসরায়েল ১৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দিবে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৪৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত এসেছে। তবে, এদের মধ্যে কে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নিহত হয়েছিল, কে ইসরায়েলের হেফাজতে মারা গিয়েছে বা যুদ্ধকালীন সময়ে ইসরায়েলি সেনারা গাজা থেকে আটক করেছিল- এটি এখনও নির্দিষ্ট নয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মাত্র ৯৯ জনের মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে। গাজায় ডিএনএ পরীক্ষার কীটের ঘাটতির কারণে পরিচয় যাচাই প্রক্রিয়া জটিল হয়ে পড়েছে।